গাউসুল আযম বড়পীর হযরত আব্দুল কাদের জিনালী (রহঃ) তার ৬ষ্ট ওয়াজে বলেছেন:
- তুমি আল্লাহর নির্দেশের সম্মান রক্ষাকল্পে স্বীয় প্রকৃতীর কামনা-বাসনাকে বিলীন করে দাও। অর্থাৎ নিজেকে পুরোপুরি দ্বীনি তরীকার উপর সোপর্দ করো। কুরআন পাকে ইরশাদ রয়েছে, যদি তোমরা প্রকৃত মুমিন হয়ে থাক, তবে তোমাদের যাবতীয় কাজে আল্লাহর উপর নির্ভরশীল হয়ে যাও। প্রকৃতীর কামনা বাসনা পরিত্যাগ করে আল্লাহর ইচ্ছারুপ কাজ করো। যদি তুমি স্বীয় অস্তিত্ব আল্লাহর সামনে ফানা করে দাও, তাহলেই তুমি আল্লাহর প্রদত্ত জ্ঞান লাভের যোগ্য পাত্র রুপে গণ্য হবে। অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা তোমার হৃদয়কে আধ্যাত্মিক জ্ঞান দানে অলোকিত করবেন।
- স্বীয় অস্তিত্ব ফানাকরা তথা খায়েশাতে নফস ( প্রকৃতীর কামনা ) বীলিন করে দেওয়ার চিহৃ হলো, তুমি দুনিয়াদার লোকের সাথে উঠাবসা-সংস্রব সম্পুর্ণ রুপে পরিত্যাগ করবে। তাদের পার্থিব বস্তু গুলোর প্রতি একেবারে নির্লোভ হয়ে যাবে। তাছাড়া কোন পার্থিব লাভ-ক্ষতি, আয় রোজগার, উন্নতি-অবনতি প্রভৃতি ব্যাপারে নিজস্ব চেষ্টা তদবীর পুরোপুরী বর্জন করবে। নফসের তাবেদারী থেকে বিরত থাকবে। সব কিছুতেই আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীল হবে, তাহলে তোমার জন্মের পূর্বে, জন্মকালীন লগ্নে অর্থাৎ আদিতে যেমন তিনি তোমার সব বিষয় ব্যাপার, স্বহস্তে গ্রহণ করেছিলেন, তদ্রুপ পরবর্তীতেও তা তিনি নিজ হাতে তুলে নিবেন।
- যেমন তুমি মাতৃগর্ভে থাকা কালে, শৈশবে, দোলনাতে থাকাবস্তায় তোমার সব দায়িত্ব তাঁর হাতে ন্যস্ত ছিল, ঠিক তদ্রুপ এখনও তুমি তোমার সব কাজের দায়িত্ব তাঁর হাতে ছেরে দিলে তিনি তা গ্রহণ করবেন। তোমার নিজের ইচ্ছা-আকাঙ্খা বিলিন করে দেওয়ার আরও নিদর্শন হলো, তুমি কখনও নিজের কোন উদ্দেশ্য নির্ধারন করবে না। তোমার কোন আবশ্যকতা বা প্রয়োজনীয়তার অনুভূতি বা গরজ থাকবে না। কেননা যখন তুমি আল্লাহর সামনে নিজেকে, নিজের ইচ্ছা আকাঙ্খাকে বিসর্জন দিয়েছ, তখন সেসব আবার কেমন করে থকতে পারে? পারে না বরং এমতাবস্হায় তোমার ইচ্ছা ছাড়াই আল্লাহর ইচ্ছা তোমার মধ্যে প্রবল হবে। তখন তুমি খোদ আল্লাহ পাকের ইচ্ছা ও কাজে পরিনত হবে। তখন তোমার দেহে-মনে অপূর্ব আরাম ও শান্তি অনুভূত হবে। হৃদয় প্রশস্ত ও প্রশান্ত ভাব ধারন করবে। মুখমন্ডল জ্যোতির্ময় হবে।
- আল্লাহ ব্যতীত কোন মানুষের কাছে কোন আশা-অকাঙ্খা প্রয়োজন থাকবেনা। অর্থাৎ তুমি সম্পূর্ণ মুক্ত স্বাধীন হয়ে যাবে। আল্লাহ পাকের অপূর্ব কুদরতে তোমার মধ্যে পরিবর্তন ঘটে যাবে, পরিবর্তন সৃষ্টি হবে। শুধু আল্লাহ পাকের ইচ্ছা দ্বারাই তুমি পরিচালিত হবে। আল্লাহ পাক তোমাকে তাঁরই খাছ জ্ঞান দ্বারা জ্ঞানী করে তুলবেন। যা দ্বারা তুমি ন্যায়-অন্যায়, ভাল-মন্দ, সৎ-অসৎ ও সত্য-মিথ্যা, হক ও নহতের পার্থক্য করতে পারবে। আল্লাহ তোমাকে নূরের লেবাছ এবং মারেফাতের ভূষণে সজ্জিত করবেন। অর্থাৎ তিনি তোমার অন্তরে আধ্যাত্বিক জ্ঞান এবং পরিচয়ের ইলম প্রদান করবেন।পরিশেষে আল্লাহর পরিচয় জ্ঞান এবং মারেফাতে যারা অগ্রগামী ও ঐ পথের দিশারী, তাদের কাতারে তোমাকে স্হান দান করা হবে। তখন তুমি কোন চূর্ণ বস্তূ তুল্য অবস্হা প্রাপ্ত হবে। তোমার মধ্যে কোন কামনা-বাসনার অস্তিত্ব থাকবেনা। এ সময় তুমি তলা ছিদ্র বস্তুর রুপ ধারন করবে। যাতে কোন রুপ তরল বস্তু খাকতে পারেনা। আর তার সাথে দূষিত ময়লা বস্তুও বের হয়ে যায় অর্থাৎ মানবসুলভ প্রকৃতি এ সময় তোমার থেকে একেবারে বিলুপ্ত হবে। ফলে অন্তরে শুধু আল্লাহ পাকের ইচ্ছা ও তুষ্টির চিন্তা ব্যতীত অন্য কিছুই খুঁজে পাওয়া যাবেনা।
- এমতবস্তায় তোমাকে নানারুপ কারামাত তথা দৈবশক্তি অর্পন করা হবে, নানাবিধ গুপ্ত জ্ঞান দ্বারা অশেষ ক্ষমতায় ক্ষমতাবান করে তোলা হবে। ফলে তোমার দ্বারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে আলোকিত কার্য্কলাপ প্রকাশ পেতে থাকবে। সাধারণ শ্রেণীর লোকদের জ্ঞানে যা তোমারই ক্ষমতার নিদর্শন বলে বিবেচিত হবে কিন্ত যে সব ব্যক্তি আধ্যাত্মিক জ্ঞানপ্রাপ্ত বা দিব্যদৃষ্টি সম্পন্ন, তার ঐ ধরনের কার্যাবলীকে কুদরতে ইলাহী বা আল্লাহর ক্ষমতার প্রকাশ বলে বুঝে নিবে। উক্ত পর্যায়ে উপনীত হলে তুমি বিচূর্ণ হৃদয় শ্রেণীর লোকদের দলভূক্ত হয়ে যাবে।যাদের মানবীয় প্রকৃতি ও গুণাবলী ছাড়া প্রবৃত্তির কামনাসমূহ সম্পূর্ণ রুপে বিছিন্ন হয়েছে এবং প্রবৃত্তির কামনার স্থলে আল্লাহ পাকের ইচ্ছা ও মর্জী যাদের মধ্যে অর্পিত হয়েছে এবং যাদের হৃদয়ে প্রতিনিয়ত আল্লাহর নির্দেশে নানাবিধ-বাসনার উদয় হয়।
- হযরত রসুলে পাক ( সাঃ ) ইরশাদ করেছেন, পার্থিব জগতের বস্তুরাজীর মধ্যে তিনটি বস্তু আল্লাহ আমার নিকট আনন্দায়ক ও সুখকর করেছেন। যথাঃ (১) সুগন্ধি (২) (নেককার) স্ত্রী এবং (৩) চোখ ও মনের শান্তিদায়ক নামায। যে নামাযের মধ্যে দীদারে ইলাহীজনিত অতুলনীয় শান্তি লাভ করা যায়। হাদীসে কুদসীতে রয়েছে, আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, আমার শান, কুদরত এবং বিরাটত্ব অবলোকন করে যাদের হৃদয় চূর্ণ হয়েছে, আমি তাদের কাছে বিদ্যমান। অতএব বুঝা যাচ্ছে যে পর্যন্ত না তুমি নিজেকে ও নিজের কামনা-বাসনাকে বিলীন করবে, সে পর্যন্ত আল্লাহ তোমার নিকটবর্তী হবে না। অতঃপর তোমার বাহ্যিক ও অত্যান্তরীণ যাবতীয় বস্তু যখন চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে এবং তোমার মাঝে কোন কিছুর অস্তিত্ব থাকবেনা এবং যখন তুমি আল্লাহ ব্যতীত কোন কাজের যোগ্য থাকবে না অর্থাৎ তুমি সমূহ মৃর্ত্যুর কবলিত হবে বা বিলীন হয়ে যাবে, তখন আল্লাহ পাক স্বীয় খাছ নূর দ্বারা তোমাকে পুনঃ নবজীবন দান করবেন। অতঃপর তিনি তোমার মধ্যে ইচ্ছা পয়দা করবেন। তখন আল্লাহর সৃষ্ট ইচ্ছা দ্বারা তুমি ইচ্ছা করবে। কিন্তু সেই ইচ্ছার মধ্যে যখন তোমার অস্তিত্বের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া য়ায় আল্লাহ পাক ঐ ইচ্ছাকেও চূর্ণ করবেন। যার ফলে তুমি স্থায়ীভাবে ভগ্ন হৃদয় বা চূর্ণ অন্তর বিশিষ্ট হয়ে যাবে।
- অনন্তর আল্লাহ তোমার মধ্যে নব-নব ইচ্ছা পয়দা করবেন। তবে তার মাঝে তোমার অস্তিত্ব কিংবা অস্তিত্বের লেষমাত্রও অবিশষ্ট থাকলে সে ইচ্ছাসমূহও তোমার মধ্য থেকে দুর করা হবে। বিখ্যাত কবি জ্ঞানী জামি বলেছেন, সবার মৃর্ত্যু একবার হয় কিন্ত অধম জামীর মৃর্ত্যু ঘটে অনেকবার। জৈনেক দরবেশ বলেছেন যে, হাজার লক্ষ বা কোটিবার তুমি মৃর্ত্যুবরণ করলেও যে পর্যন্ত তোমার মধ্যে একটি মাত্র নিঃশ্বাস ও বাকী থাকবে, সে পর্যন্ত তোমাকে মৃত ব্যক্তি বলা যাবে না। এভাবে তোমাকে আধ্যাত্মিক জগতে স্থায়ী জীবন প্রদান করার জন্য যে সময় ধার্য আছে, সে সময় না আসা পর্যন্ত তুমি বারবারই মৃর্ত্যুর কবলিত হতে থাকবে। অর্থাৎ ফানা বা বিলীনত্বের সিড়িসমূহ তুমি একের পর এক অতিক্রম করতে থাকবে। এভাবে অবশেষে তুমি আল্লাহ পাকের সান্নিধ্য বা দর্শন লাভে সক্ষম হবে। অতএব আল্লাহ পাকের বাণী- যে চূর্ণ হৃদয় হয়ে গেছে, আমি তার কাছে আছি আর আমি ( বড়পীর সাহেব ) যে বলেছি, ইচ্ছাসমূহের মাঝে অস্তিত্ব বা অস্তিত্বের লেষমাত্র বাকি থাকলেও সেই ইচ্ছাগুলোকে তোমার কাছ থেকে দূর করা হবে এর সারমর্ম এই-ই।
- হাদীসে কুদসীতে ইরশাদ রয়েছে, আল্লাহ বলেন, মুমিন বান্দা নফল ইবাদতের দ্বারা আমার সান্নিধ্য তালাস করে। শেষ পর্যন্ত আমি তাকে প্রিয়রুপে গ্রহণ করি, যখন সে এই মর্যদা অর্জন করে, তখন আমি তার শ্রবণ শক্তি হয়ে যাই, যাদ্বারা সে শ্রবণ করে, আমি তার দৃষ্টি শক্তি হয়ে যাই, যাদ্বারা নে দর্শন করে, আমি তার মুখ হয়ে যাই, যাদ্বারা সে কথা বলে, আমি তার হাত হয়ে যাই, যাদ্বারা সে ধারণ করে, আমি তার পা হয়ে যাই, যাদ্বারা সে চলাচল করে। যে পর্যন্ত পূর্ণ ফানা বা বিলীনত্ব অর্জিত না হয় সে পর্য়ন্ত এরুপ অবস্হাপ্রাপ্ত হওয়া যায় না। সৃস্টির মধ্যে ভালো ও মন্দ দুটো বস্তুই আছে। সুতরাং তুমিও তা থেকে খালি নও। নেকি-বদি উভয়ই আল্লাহর নির্দ্ধারিত তাকদীরে বিজড়িত। তবে যখন তুমি সৃস্টির মধ্যকার নেকীর আশা ও বদির ভয় সম্পূর্ণ রুপে পরিত্যাগ করবে, তোমার দৃষ্টিতে শুধু আল্লাহ ব্যতীত আর কোন কিছুই বাকি থাকবেনা, যেমন তোমার জন্মের পূর্বেও তিনি বিরাজমান ছিলেন। ( তোমার জন্মের পরও ) যখন তুমি পূর্ণ রুপে ফানা ( বিলীনত্ব ) লাভ করবে, তখন তাকদীরের বদি ( মন্দ ) থেকে তোমাকে রেহাই দেয়া হবে, কেবল তাকদীরের নেকীর মধ্যেই তুমি অবগাহন করবে। তখন তুমি যাবতীয় নেকী ও ভালাইর আবাস হয়ে যাবে।
- সব রকমের নিয়ামত, তুষ্টি এবং সুখ-সমৃদ্ধির করুণার রুপ ধারণ করবে। দ্বীনের পথিক এবং হক প্রত্যাশীদের এরুপ ফানাই কাম্য। এটাই তাদের তালাসের বস্তু। এটাই তাদের চরম এবং পরম লক্ষ্য। ফকীর দরবেশদের উদ্দেশ্যের এটাই শেষ সীমা। এই ফানা বা বিলীনত্বের নামই হলো দৃঢ়তা বা অবিচলতা। যা পূর্ববর্তী অলী আবদালগণ অম্বেষণ করেছেন, যার সাধনায় কালাতিপাত করেছেন। সেই সালেক ও সাধকদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্যই ছিল নিজ ইচ্ছা ও অকাঙ্খাকে পরিত্যাগ করতঃ তদস্থলে আল্লাহর ইচ্ছাকে প্রতিষ্টিত করা এভাবে নিজ ইচ্ছাকে বর্জন বা পরিবর্তন করে আল্লাহর ইচ্ছাকে প্রতিষ্ঠীত করার কারনেই তারা আবদাল নামে পরিচিত হয়েছেন। সাধারণ লোকদের আল্লাহর নিষিদ্ধ কার্যে লিপ্ত হওয়াই গুনাহর কাজ কিন্ত যারা আবদাল শ্রেনীর অন্তর্গত হয়েছেন, তারা আল্লাহর ইচ্ছার সাথে নিজের ইচ্ছার মিশ্রণ ঘটালেই গুনাহাগার, যদি এরুপ কাজ হয়ে যায় তবে তাও গুনাহের কাজ হয়ে যাবে।
- অবশ্য দয়াময় আল্লাহ অনুগ্রহবশতঃ তাদের সে সব ভূল বা অসতর্কতা তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেন। তারা তখন সে ভূল শুধরিয়ে নেন। অলী-আবদালদের এরুপ ভুল করা অস্বাভাবিক বা অসম্ভব নয় কেননা তারা মাছুম ( বেগুনাহ ) নন। মাছুম শুধু নবী-রাসূল ও ফেরেশতাগণ, তাঁরা আল্লাহ পাকের কৃপার কারণে গুনাহ-খাতা থেকে মাহফূজ বা সংরক্ষিত। তাঁরা ছাড়া যাবতীয় জ্বীন ও মানব-যারা শরীয়তের আওতাধীন-তথা আল্লাহর আদেশ নিষেধ পালনে বাধ্য তাদের মধ্যে কেউ-ই মাছুম নন। অলি আওলিয়াদেরকে কামনা থেকে এবং আবদালদেরকে ইচ্ছা থেকে যদিও আল্লাহ হেফজত করেছেন কিন্ত তাঁরা গুনাহ বা ক্রটিমুক্ত নন। কেননা অসাবধানতা বা অলসতাবশতঃ কিংবা হাল বা অবস্হার প্রাবল্যের কারণে অলীদের কামনায় লিপ্ত এবং আবদালদের ইচ্ছায় লিপ্ত হওয়া একান্তই সম্ভব। অবশ্য সে সব ক্ষেত্রে আল্লাহ স্বীয় অনুগ্রহে তাঁদেরকে শুধরে নেয়ার তাগিদে হুশিয়ার করে দেন। তাঁরা তখন আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানিয়ে গুণাহ-খাতা থেকে নিস্কৃতি পেয়ে যান। মোটকথা আম্বিয়াগণ মাছুম ( নিস্পাপ ) এবং অলী আবদালগণ মাহফূজ ( সংরক্ষিত ) একথার তাৎপর্য উক্ত বর্ণনা থেকে বুঝে নিতে হবে।
Casinos Near Casinos, Biloxi, MS - MapYRO
উত্তরমুছুনThe 경상남도 출장샵 closest casinos to Biloxi 평택 출장샵 include MGM National Harbor, MGM Grand 강릉 출장샵 Detroit, MGM Lincoln Casino, the Grand Detroit, 하남 출장안마 Hilton Grand Detroit, and the 대구광역 출장마사지 Paris Hilton.
The model has all the favored on line casino video games in retailer, ready to fulfill the expectations of each {the new|the model new} and skilled players. The on-line on line casino space is jam-packed with choices, 온라인카지노 so providing a great welcome bonus can stand one out against one other. It is imperative to fully perceive the terms and situation of every offer, however.
উত্তরমুছুন